সাফল্যের জন্য চাই সুস্থ দেহ। আর সুস্থ দেহের জন্য পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকাটা ভীষণ জরুরী। পরিষ্কার থাকার উপায় রয়েছে নানাবিধ।
তার মধ্যে নখ কাটা হলো অন্যতম। আমরা দুই হাত দিয়ে নানান কিছু স্পর্শ করি। নিজের অজান্তেই দুই হাতে ও নখে লেগে যায় বিভিন্ন রকমের ক্ষতিকর অনুজীব।
অনুজীব হলো খুব ক্ষুদ্র ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বা ক্ষতিকর পরজীবী যা দেহের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এর পরজীবী গুলো নখের ময়লাতে বাসা বাধে, ডিম পাড়ে ও বাচ্চা জন্ম দেয়।
নখ নিয়মিত না কাটলে এই বাচ্চাগুলো (অনুজীবের) বড় হয়ে যায়। তারা বিভিন্ন রকম রোগ তৈরী করে। এবং তারা আবার বাচ্চা দেয়। সেই বাচ্চাগুলো আবারও বড় হয়।
পরিণামে তৈরী হয় বিভিন্ন অসুখ। যেমনঃ ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, জ্বর জ্বর লাগা, ফুড পয়জনিং…।
নখ না কেটে পরিস্কার থাকলেও তাতে রোগজীবাণু জমতে পারে। তাই নখ কেটে ফেলাই ভালো। আর ছোটদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে খুব কম। তাই তাদেরকে থাকতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
ছোট বড় সবাই কে হাতের নখ সব সময় কেটে ফেলতে হবে। নখ দাঁত দিয়ে কাটা যাবে না। শিশুরা অনেক সময় দাঁত দিয়ে নখ কামড় দেয়। এতে রোগজীবাণু পেটের মধ্যে চলে যাবে।
এসব রোগ জীবাণু থেকে জন্ডিসও হতে পারে। জন্ডিস বিভিন্ন প্রকারের হয়। কিছু জন্ডিস আছে, যা তৈরী হয় নোংরা খাবার ও পানি থেকে। এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাবে পরিণামে ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করতে পারে সেই জন্ডিস।
এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য অবশ্যই বিশুদ্ধ খাবার ও পানি খেতে হবে। আর নিয়মিত নখ কাটতে হবে, হাত পরিষ্কার রাখতে হবে। হাত দিয়ে আমাদের সবকিছু স্পর্শ করতে হয়। তাই হাতে প্রচুর রোগ জীবাণু লেগে থাকে। এই রোগ জীবাণু ধুয়ে ফেলতে হবে। তাই নখ রাখা যাবে না। নেইল পালিশ থাকলে খেয়াল রাখতে হবে যেন, নখের ফাঁক ফোঁকরে ময়লা জমে না থাকে।
দাঁত বা ব্লেড না, নেইল কাটার দিয়ে নখ কাটা হলো সর্বাপেক্ষা উত্তম। শুধু ছোটরা নয়, বড়দের নখেও জমতে পারে রোগজীবানু। তাই অভিভাবককে সন্তানদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। নিয়মিত নখ কেটে দিতে হবে।
আর নখ ভালো রাখার জন্য আয়রন (যা রক্ত তৈরী করে), ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার ছোটবেলা থেকেই দরকার। চকোলেট, বার্গার, চিপ্স বেশী খেলে হবেনা।
আমাদের সবাই কে বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি সহ মৌসুমী ফল খেতে হবে।
লাল শাক, পালংশাক, ছোট মাছ, দুধ, ডিম (দেশী মুরগীর হলে খুব ভালো হয়), বাদাম ভীষণ উপকারী।
ছানা, পনির বা দই খেতে হবে। এই খাবারগুলোতে রয়েছে সব রকমের পুষ্টি।
ছোট বড় সবাইকে নিয়মিত নখ কাটা উচিত। করোণা ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানোর জন্য আমাদেরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
সুস্থ থাকলে, আমরা দ্বিগুণ পরিমাণ কাজ করতে পারবো।
ফারহানা মোবিন
চিকিৎসক, লেখক ও উপস্থাপিকা